

Author: Massiur Rahman Tauhid
Downloads: 6
Pages: 160
Published: 5 months agoRating: Rated: 0 times Rate It
বিভিন্ন বিষয়গুলোতে নিজের মতামত। এতদিন এদেশের মানুষদেরকে যা বলা হয়েছিল, যা জানানো হয়েছিল এবং যা বোঝানো হয়েছিল আমার মতামতগুলো তা থেকে অনেকখানি ভিন্ন মতের। এ ভিন্ন মতের বিষয়টি এমন পর্যায়ের যা গত একশত বছরের এদেশের রাজনীতিবিদদের এবং বুদ্ধিজীবীদের রাজনৈতিক চিন্তা-ধারাকে অনেকখানি ভ্রান্ত বলে প্রমাণে যথেষ্ট ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি মনেকরি। একই সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাতীয় স্বার্থ প...
আমি একজন রাজনীতিবিদ। আমার জন্ম করাচীতে। নিবাস ঢাকায়। একনাগাড়ে সাত বছর ছিলাম কোলকাতায়। ১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত। তবে ১৯৯৭ সাল থেকে আমি কোলকাতা থেকে খুব ঘন ঘন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাওয়া-আসা করতে শুরু করেছিলাম। আবার যেখানেই যেতাম আমার মন যেন সব সময় কোলকাতায় পড়ে থাকতো। মনে হত কি যেন বোঝার বা জানার বাকি রয়ে গিয়েছে। সত্যি বলতে কি আমার রাজনৈতিক চিন্তাধারার অনেকখানি গভীর হয় ঢাকা থেকে কোলকাতা যাওয়ার পর। যদিও মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এর শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সালের মাঝামাঝি থেকে। যখন সেসময়কার বিরোধী দলীয় নেত্রী হাসিনার মিন্টু রোডের বাসভবনে জার্মানী থেকে আসা সাংবাদিকদের সাথে আমার পরিচয় হয়। ঐ সময় বিভিন্ন জাতিয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিশেষ করে ফারাক্কা, তালপট্টি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ইত্যাদি নিয়ে পক্ষ বিপক্ষের রাজনৈতিক মত আমাকে গভীর ভাবনায় ফেলে দেয়। কারো মতামত আমার ভালো লাগেনি। যদিও ওসব বিষয়গুলোতে আমার নিজের মতামত তেমন জোড়ালো ছিল না। কিন্তু কোলকাতায় যাওয়ার পর থেকে আমার মনে ধীরে ধীরে তৈরি হতে থাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতিয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর আমার নিজের স্পষ্ট মতামত। ভারতের রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি এবং সামরিক নীতির উপর আমার পর্যবেক্ষণ এবং বিেেশ্লষণের বিবেচনায়। তারপর কোলকাতা হয়ে ইউরোপে আরও ছয় বছর কাটিয়ে ২০০৬ সালে ঢাকায় ফিরে এসে বুঝলাম যে, আমি আর সেই আমিতে নেই। ঢাকা আর ঢাকার মানুষদের সাথে আমার বিস্তর ফারাক তৈরি হয়ে গিয়েছে। কারো সাথেই আমার চিন্তা-ধারার মিল হচ্ছে না। রাজনীতিতে আমার জন্য যেন কোন জায়গা নেই। আমার, আমার বাবা-মা এবং আমার পূর্বপুরুষদের ভালোবাসার এই দেশে আমি যেন এক অচেনা পরবাসী।তখন ভাবলাম, আমি কী একেবারে হারিয়ে যাবো? তার চাইতে কিছু লিখলে কেমন হয়? তারপর থেকে একটু একটু করে লিখে যাচ্ছি। বিভিন্ন বিষয়গুলোতে নিজের মতামত আর কি। এতদিন এদেশের মানুষদেরকে যা বলা হয়েছিল, যা জানানো হয়েছিল এবং যা বোঝানো হয়েছিল আমার মতামতগুলো তা থেকে অনেকখানি ভিন্ন মতের। এ ভিন্ন মতের বিষয়টি এমন পর্যায়ের যা গত একশত বছরের এদেশের রাজনীতিবিদদের এবং বুদ্ধিজীবীদের রাজনৈতিক চিন্তা-ধারাকে অনেকখানি ভ্রান্ত বলে প্রমাণে যথেষ্ট ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি মনেকরি। একই সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাতীয় স্বার্থ প্রশ্নে সতর্ক এবং সুবিবেচক হতে সজাগ করবে। আসলে আমি শুরু থেকে একজন রাজনীতিবিদ বিঁধায় আমার লিখায় সর্বদা রাজনীতির বিষয় থাকে বেশি। থাকে গণতন্ত্র, মহা-বিকেন্দ্রীকরণ এবং কৌশলগত ও বুদ্ধিদীপ্ত উন্নয়নের কথা। আইন, শাসনতন্ত্র ও পররাষ্ট্রনীতির কথা। রাজনীতির মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষদের কাছাকাছি পৌছাতে পারিনি বিধায় লিখার মাধ্যমে আমি চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি যে, আমার দেশের সাধারণ মানুষেরাই পারবেন এদেশের অসংখ্য মনেপ্রাণে দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের বর্তমানের কোণঠাসা অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে। যদিও রাজনীতিবিদরা সাধারণত সর্বদা লিখেন না। কিন্তু আমি লিখি। কারণ দেশে বর্তমানে চলমান অগণতান্ত্রিক, দেশ এবং জাতীয় স্বার্থ বিরোধী লুটেরা রাজনীতিতে আমি অভ্যস্ত নই। যারা মুখে শুধু জনগণকে দিয়ে যান অথচ সর্বদা নিজেদের থলি ভরতে ব্যস্ত থাকেন তাদের সাথে আমার সখ্যতা হয়ে উঠছে না। যারা দেশের উন্নয়নের কথা বলে উন্নয়ন নিয়ে শুধু নিজেদের ধান্ধা করে যাচ্ছেন তাদের সাথে আমি একমত হতে পারছি না। আমার সক্রিয় রাজনীতি শুরু হয় নয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ফুলটাইম অংশগ্রহণের মাধ্যমে। আর বিচ্যুতি ঘটে ১৯৯২ সালের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনের পরে।